হাফেজ মাওলানা আশিকুর রহমান রাহমানী চলছে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়াবহ বন্যা বিপর্যয়। ধারণা করা হচ্ছে এটি বাংলাদেশের স্বরণ কালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্যা।
সিলেট সুনামগঞ্জের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ বন্যায় প্লাবিত। এ ছাড়াও নেত্রকোনা, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, ঈশ্বরগঞ্জ সহ আরো প্রায় কয়েকটি জেলায় বন্যার এই প্লাবন দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে কত মানুষের ঘর বাড়ি সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কারো ঘরের টিনের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছে। কারো ঘরে গলা সমান, হাটু সমান পানি উঠেছে।
হাজার হাজার অসহায় নিঃস্ব মানুষের ঘর বাড়ি দালান সব বন্যার পানিতে প্লাবিত। কেউ কেউ স্বজন হারিয়ে শোকে কাতর। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কেউ একটু উঁচু সড়কে দাঁড়িয়ে থাকার ঠাই খুঁজছে। সমৃদ্ধ পানি নাই, খাবার নাই।
বানভাসি এলাকাগুলোতে খাদ্যের সংকটে শিশু বৃদ্ধারা হাউমাউ করছে। এই পরিস্থিতিতে যারা ভালো আছি তাদের উপর মানবতার বড় দায়িত্ব কাধে এসেছে। মানুষ মানুষের জন্য। মানব জাতিকে আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টি করেছেন “আশরাফুল মাখলুকাত” তথা সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ মানব হিসাবে। তার মাঝে থাকবে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন, সম্মান, মানবতা, দয়াদ্রতা।
অপর মুসলিম ভাইয়ের কষ্টে এগিয়ে আসবে। তার জন্য ব্যথিত হবে, পাশে দাঁড়াবে,শান্তনা দিবে, সাহস যোগাবে । তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে। ইসলাম আমাদের তাই শিক্ষা দেয়। ইসলাম মানুষকে অন্যের কল্যাণে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা করতে অনুপ্রাণিত করেছে। কুরআন-হাদিসে মানব সেবার অসীম গুরুত্বারুপ করা হয়ছে। মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ،
‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদাহ ৫/২)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইরশাদ করেছেন ,وَاللهُ فِى عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِىْ عَوْنِ أَخِيْهِ، ‘আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত সাহায্য করতে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে’। মুসলিম হা/২৬৯৯; তিরমিযী হা/২৯৪৫; আবূদাঊদ হা/৪৯৪৬; ইবনু মাজাহ হা/১৮৫;
নবীজি (সা.)নিজে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সেবামূলক সংঘটন তৈরি করে ছিলেন । আর্তমানবতার সেবা, অসহায়দের সাহায্য-সহযোগিতা করে আরবের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলে।
রাসূলের এই মানব সেবামূলক কাজ বিধর্মীদের কাছেও প্রশংসনীয় ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিজে না খেয়ে গরীব দুঃখীকে খাবার দিয়েছেন। অন্যকে সাহায্য করার জন্য নিজের প্রয়োজনকে ত্যাগ করে ছিলেন।
নিচে মানব সেবা কি কি হতে পারে তার কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হলো।