সদকায়ে জারিয়া: কেন এবং কীভাবে এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

সদকায়ে জারিয়া হলো এমন একটি দান যা স্থায়ীভাবে কল্যাণ বয়ে আনে। এটি এমন একটি দান যেটা শুধু দাতাকে নয় বরং সমাজের অন্যান্য মানুষকেও দীর্ঘস্থায়ীভাবে উপকৃত করে। ইসলামে সদকায়ে জারিয়া এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মানুষকে আল্লাহর নিকট  অতিব ঘনিষ্ঠ করে এবং আখিরাতে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় শুধুমাত্র তিন প্রকার আমল ছাড়া। ১. সদাকাহ জারিয়াহ্ ২. এমন ইলম বা জ্ঞান যার দ্বারা অন্যের উপকার হয় ৩. পুণ্যবান সন্তান যে তার জন্যে দু’আ করতে থাকে’।

(সহীহ্ মুসলিম, হাদিস নং ১৬৩১)

সদকায়ে জারিয়া কি? 

সদকায়ে জারিয়া হলো এমন দান যা স্থায়ীভাবে কল্যাণ আনে। এটি হতে পারে একটি মসজিদ নির্মাণ, একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, একটি কূপ খনন, বা কোনো ধরনের শিক্ষা ও জ্ঞান বিতরণ যা মানুষকে উপকৃত করবে। হাদিসে বলা হয়েছে, “যখন কোনো মানুষ মারা যায়, তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, শুধুমাত্র তিনটি আমল ছাড়া: সদকায়ে জারিয়আ, এমন জ্ঞান যা থেকে উপকৃত হওয়া যায়, এবং এমন সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।” (মুসলিম) 

সদকায়ে জারিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ? 

সদকায়ে জারিয়া আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এমন দান যা আমাদের জীবনের পরেও চলতে থাকে। এটি একটি স্থায়ী সম্পদ যা আমাদের আখিরাতের জন্য তৈরি করে। আল্লাহ বলেন, “যারা তাদের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তারা একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শাখা বের হয় এবং প্রতিটি শাখায় একশত বীজ থাকে।” (সূরা বাকারা: ২৬১)

কিভাবে সদকায়ে জারিয়া করবেন? 

সদকায়ে জারিয়া করার অনেক উপায় রয়েছে। আপনি একটি মসজিদ নির্মাণ করতে পারেন, একটি কূপ খনন করতে পারেন, একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, বা কোনো দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পারেন। এছাড়াও আপনি এমন জ্ঞান বিতরণ করতে পারেন যা থেকে মানুষ দীর্ঘস্থায়ীভাবে উপকৃত হবে। আল্লাহ বলেন, “যারা তাদের সম্পদ রাত এবং দিন, গোপন ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার রয়েছে।” (সূরা বাকারা: ২৭৪)

সদকায়ে জারিয়া এর ফজিলত 

সদকায়ে জারিয়া এর ফজিলত অপরিসীম। এটি মানুষকে আখিরাতে সফলতা এনে দেয় এবং দাতাকে আল্লাহর কাছে আরো প্রিয় করে তোলে। হাদিসে বলা হয়েছে, “আল্লাহ বলেছেন, ‘মানুষের প্রতিটি ভালো কাজের জন্য দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত পুরস্কার রয়েছে। কিন্তু রোজা ব্যতীত, যা আমার জন্য এবং আমি নিজে তার পুরস্কার দেবো।'” (বুখারি)

সদকায়ে জারিয়া এর উদাহরণ 

সদকায়ে জারিয়া এর অনেক উদাহরণ রয়েছে। আপনি একটি মসজিদ নির্মাণ করতে পারেন, একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, একটি কূপ খনন করতে পারেন, অথবা একটি হাসপাতাল নির্মাণ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি এমন জ্ঞান বিতরণ করতে পারেন যা থেকে মানুষ দীর্ঘস্থায়ীভাবে উপকৃত হবে। হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি একটি গাছ রোপণ করে এবং তার ফল খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে, তার জন্য সদকা হিসাবে গণ্য হবে।” (বুখারি)

সদকায়ে জারিয়া এর প্রভাব

সদকায়ে জারিয়া এর প্রভাব সমাজে ব্যাপক। এটি শুধু দাতাকে নয়, সমাজের অন্যান্য মানুষকেও উপকৃত করে। এটি সমাজে শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। আল্লাহ বলেন, “যারা তাদের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বাগানের মত, যা বৃষ্টি পায় এবং ফল দেয়।” (সূরা বাকারা: ২৬৫)

সদকায়ে জারিয়া কিভাবে আমাদের আখিরাতে সাহায্য করে? সদকায়ে জারিয়া আমাদের আখিরাতে অনেক সাহায্য করে। এটি একটি স্থায়ী সম্পদ যা আমাদের মৃত্যুর পরেও চলতে থাকে এবং আমাদের জন্য আখিরাতে পুরস্কার এনে দেয়। আল্লাহ বলেন, “যারা তাদের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তারা একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শাখা বের হয় এবং প্রতিটি শাখায় একশত বীজ থাকে।” (সূরা বাকারা: ২৬১)

সদকায়ে জারিয়া এর মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনা যায় কিভাবে? 

সদকায়ে জারিয়া এর মাধ্যমে সমাজে অনেক পরিবর্তন আনা যায়। এটি দারিদ্র্য দূর করতে সাহায্য করে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে সাহায্য করে, এবং সমাজে শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। আল্লাহ বলেন, “যারা তাদের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তারা একটি বাগানের মত, যা বৃষ্টি পায় এবং ফল দেয়।” (সূরা বাকারা: ২৬৫)

সদকায়ে জারিয়া এর মাধ্যমে আমাদের জীবনে শান্তি আসে কিভাবে? 

সদকায়ে জারিয়া এর মাধ্যমে আমাদের জীবনে অনেক শান্তি আসে। এটি আমাদের আখিরাতে সফলতা এনে দেয় এবং আমাদের আল্লাহর কাছে আরো প্রিয় করে তোলে। হাদিসে বলা হয়েছে, “আল্লাহ বলেছেন, ‘মানুষের প্রতিটি ভালো কাজের জন্য দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত পুরস্কার রয়েছে। কিন্তু রোজা ব্যতীত, যা আমার জন্য এবং আমি নিজে তার পুরস্কার দেবো।'” (বুখারি)

উপসংহার 

সদকায়ে জারিয়া হলো এমন একটি দান যা স্থায়ী কল্যাণ আনে এবং আমাদের আখিরাতের জন্য প্রস্তুত করে। এটি আমাদের জীবনের পরেও চলতে থাকে এবং আমাদের জন্য আখিরাতে পুরস্কার এনে দেয়। তাই আসুন, আমরা সবাই সদকায়ে জারিয়া করতে এগিয়ে আসি এবং আল্লাহর কাছে আরো ঘনিষ্ঠ হই।

সদকায়ে জারিয়া নিয়ে আরো পড়ি 

জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

সদকায়ে জারিয়া কি?

সদকায়ে জারিয়া হলো এমন দান যা স্থায়ীভাবে কল্যাণ আনে এবং দাতাকে আখিরাতে সফলতা এনে দেয়।

কিভাবে সদকায়ে জারিয়া করবেন? 

সদকায়ে জারিয়া করার অনেক উপায় রয়েছে, যেমন মসজিদ নির্মাণ, কূপ খনন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।

সদকায়ে জারিয়া এর ফজিলত কি? 

সদকায়ে জারিয়া এর ফজিলত অপরিসীম। এটি মানুষকে আখিরাতে সফলতা এনে দেয় এবং আল্লাহর কাছে আরো প্রিয় করে তোলে।

সদকায়ে জারিয়া এর উদাহরণ কি? 

সদকায়ে জারিয়া এর উদাহরণ হতে পারে মসজিদ নির্মাণ, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কূপ খনন, এবং জ্ঞান বিতরণ।

সদকায়ে জারিয়া কিভাবে আমাদের আখিরাতে সাহায্য করে? 

সদকায়ে জারিয়া আমাদের আখিরাতে অনেক সাহায্য করে। এটি একটি স্থায়ী সম্পদ যা আমাদের মৃত্যুর পরেও চলতে থাকে এবং আমাদের জন্য আখিরাতে পুরস্কার এনে দেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top